শ্রীমঙ্গল ডায়েরি: পর্ব-১

শ্রীমঙ্গল ডায়েরি: পর্ব-১
লিখেছেন: গোলাম কিবরিয়া
ছবি: লেখক

দুটি পাতার একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। সেই চায়ের রাজধানী যেন শ্রীমঙ্গল। চা বাগানের রাজ্যে এবারের ভ্রমণ ছিল অসাধারণ। ২ রাত ৩ দিনের ভ্রমণের উল্লেখযোগ্য কিছু তথ্য নিয়ে সবার জন্যে পর্ব ভিক্তিক লেখা থাকছে এবার।
২০২১ সালের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর ভোরবেলায় ট্রেনে যাত্রা শুরু হয় আমার। নির্ধারিত সময়ের ৬.২০ মিনিটের থেকে কিছুটা বিলম্বে ৬.৪৫ মিনিটে ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে যাত্রা শুরু করে। কুয়াশার চাদরে মোড়া পরিবেশে হেলেদুলে ট্রেন এগিয়ে যেতে থাকে। একের পর এক স্টেশন পাড়ি দিতে থাকে।

আর মনে হতে থাকে জীবনটাও যেন এমন। এক একটি স্টেশন জীবনের এক একটি পর্ব। দিনের আলোয় স্পষ্ট হতে থাকা চারদিকের পরিবেশ ট্রেনের জানাল দিয়ে দেখতে বেশ লাগছিলো। প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা পর শ্রীমঙ্গল স্টেশনে ট্রেন পৌঁছায়। আগেই বলে রাখছি টিকেট কাটতে হয়েছিল সিলেটের। কারণ অনেক চেষ্টা করেও ৫ দিন পূর্বেও অগ্রীম টিকেট পাইনি।


পারাবত এক্সপ্রেসে ভোর ৬.২০ মিনিটের ট্রেন ধরলে ৫ ঘন্টায় শ্রীমঙ্গল পৌঁছে যেতে পারবেন। এর ফলে ঐদিন খুব সহজেই শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করা সম্ভব হবে।
ট্রেনে শোভন চেয়ারে ভ্রমণ করলে জনপ্রতি ২৬০ টাকা পড়বে। ভ্রমণ উপভোগ করতে চাইলে শ্রীমঙ্গলে রেলে ভ্রমণের চাইতে উপযুক্ত আর কিছু নেই। অগ্রীম টিকেট কেটে নেয়া ভালো।
ঢাকা টু শ্রীমঙ্গল রেল রুট :
ঢাকা কমলাপুর – বিমান বন্দর- ভৈরব বাজার – ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আজমপুর – নোয়াপাড়া – শায়েস্তাগঞ্জ- শ্রীমঙ্গল
যে দিকে দু’চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সুনীল আকাশ, সাজানো সবুজ চা বাগান আর সুউচ্চ সবুজ পাহাড়ি টিলার নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলীর দেশ শ্রীমঙ্গল। শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনে পৌঁছানোর পূর্বেই রেলের জানালা দিয়ে এখানকার পরিবেশের কিছুটা ধারণা পাওয়া গেল। স্টেশনে নেমে অটো চালক সিরাজ মামা আমাদেরকে রিসিভ করলেন। আমাদের আগামী তিন দিনে ভ্রমণ যাত্রায় তিনি হবেন অন্যতম সঙ্গী।
শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে স্পট কাভার করতে বাহন রিজার্ভ করে নেওয়া উত্তম। বেটারী চালিত টমটম,জীপ,সিএনজি,মাইক্রো বাহন হিসেবে রিজার্ভ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ সদস্য সংখ্যা,বাজেট আর স্থানের উপর নির্ভর করবে কোন বাহনটি আপনার জন্যে। তবে আমার কাছে বেটারী চালিত টমটম বেস্ট মনে হয়েছে। এক্ষেত্রে কারো কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমাকে নক করতে পারেন।
সিরাজ মামা আমাদের রিসিভ করে নিয়ে গেলেন সকালের নাস্তার জন্যে হোটেল পানশিতে। শ্রীমঙ্গলে খাবারের জন্যে সবচেয়ে বেস্ট অপশন এটাই। মোটামুটি বাজেটে কোয়ালিটি ফুড পানশি হোটেলে পাবেন। নাস্তা পর্ব শেষে হোটেলে চেক ইন করলাম। আমরা উঠেছিলাম মনিপুরী পাড়ায় অবস্থিত গ্র্যান্ড সেলিম হোটেল এন্ড রিসোর্টে। শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন বাজেটের হোটেল এবং রিসোর্ট পাওয়া যায়। সুতরাং চিন্তার কিছু নেই। এ নিয়ে ভাববেন না।
প্রথম দিনে আমাদের গন্তব্য লাল পাহাড়, বাইক্কা বিল এবং আশপাশের চা বাগান।
দ্বিতীয় পর্বে থাকছে সে গল্প।

Mr Abraham

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.