ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকালের নাশতায় যা খাবেন

ইন্টারনেট দেখে কয়েক পদের ফল-সবজি, কিংবা শাকপাতা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে অনেকে স্মুদি তৈরি করেন

বলা হয়, সকালে খেতে হবে রাজার মতো। এমনটা বলার কারণও আছে। সারা দিন কাজ চালিয়ে নেওয়ার মূল শক্তি সকালের খাবার থেকেই আসে। তাই সকালের খাবারটা হওয়া উচিত স্বাস্থ্যসম্মত। সে কথা ভেবে অনেকেই সকালে নানা কিছু দিয়ে স্মুদি তৈরি করে খান। আবার কেউ কেউ শুধু সবজি-ফল দিয়েই হালকা নাশতা করেন। কেউ রুটি-পরোটা খান, কিংবা দুধ বা দুধজাতীয় খাবার দিয়ে সারেন সকালের নাশতা। কিন্তু সকালে আসলে কী খাওয়া উচিত? কী খেলে পুষ্টির সঙ্গে ওজনটাও থাকবে নিয়ন্ত্রণে? এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ।

ইন্টারনেট দেখে কয়েক পদের ফল-সবজি, কিংবা শাকপাতা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে অনেকে স্মুদি তৈরি করেন। অনেকেই এটিকে খুব স্বাস্থ্যকর মানেন। এমনটা নিশ্চিত করছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড হেলথও। বলছে, নানা রঙিন উপাদানের মিশ্রণে তৈরি যেকোনো খাবার পরিপূর্ণ পুষ্টি নিশ্চিত করতে সক্ষম। তাই রঙিন ফল-সবজি, বাদাম, দই, দুধ মিশিয়ে বানানো স্মুদি থেকে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, আঁশ এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। কিন্তু যা ইচ্ছা, তা–ই একসঙ্গে মিশিয়ে স্মুদি তৈরি না করাই ভালো, জানান শামছুন্নাহার নাহিদ। বলেন, না জেনেবুঝে অনেকে এমন কিছু দিয়ে স্মুদি তৈরি করেন, যা তাঁদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আর রাতের টানা ছয়-সাত ঘণ্টা ঘুমের পর সকালে খালি পেটে স্মুদি না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে অম্লীয় কিছু একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। স্মুদিতে কিসের সঙ্গে কী মেশাচ্ছেন, অনেকেই এটা ভাবেন না। এলোমেলো উপাদান মেশানো স্মুদি খাওয়ার ফলে পেটব্যথা, গ্যাস্ট্রিক, ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। যুক্তরাজ্যের হার্ট ফাউন্ডেশনের মতে, স্মুদির জন্য ব্যবহৃত ফল-সবজি ও শাকে যে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, মেশানোর পর তা অনেক বেশি হয়ে যেতে পারে। তার ওপর অনেকে অতিরিক্ত চিনি, মধু কিংবা সিরাপ ব্যবহার করেন; যা স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ, তেমনই দাঁতের ক্ষতির পাশাপাশি ওজনও বৃদ্ধি করে।

সকালের নাশতায় যা খাওয়া যেতে পারে

সকালের নাশতা ঠিকমতো খাওয়া হলে দুপুর পর্যন্ত খিদে লাগবে না

 

সকালে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে দিনের শুরু করলে সারা দিনের কর্মস্পৃহা যেমন ভালো থাকবে, ওজন কমানোর উদ্দেশ্য থাকলে সেটিও সারা দিনের ডায়েটের জন্য কল্যাণকর হবে। সকালের নাশতায় প্রথমেই যা থাকতে হবে, তা হলো অ্যালকালাইন গ্রুপের খাদ্য, যার কাজ পাকস্থলীর অম্লীয়ভাব প্রশমিত করা। সেটা হতে পারে যেকোনো শর্করাজাতীয় খাবার; যেমন, ভাত, রুটি, নুডলস, ওটস ইত্যাদি। এগুলোর সঙ্গে এমন সবজি খেতে হবে, যেগুলো পানিসমৃদ্ধ, চিনির পরিমাণ কম এবং যেগুলো খেলে পেটে অ্যাসিড তৈরি হওয়ার ঝুঁকি কম। যেমন লাউ, পেঁপে, জালি, পটোল, আলু ইত্যাদি। সঙ্গে রাখতে হবে একটি আমিষের উৎস।

শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, সকালের নাশতা হতে হবে যাকে বলে একদম ব্যালেন্স ডায়েট, যা থেকে ভিটামিন, চর্বি, খনিজ—সব আনুপাতিক হারে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সকালের নাশতা ঠিকমতো খাওয়া হলে দুপুর পর্যন্ত খিদে লাগবে না। অহেতুক আজেবাজে খাওয়াও বন্ধ হবে।

Developer

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.